তিনটি ছক্কা এবং চার উইকেট নিয়ে ইতিহাস গড়লেন রশিদ খান, যা আফগানিস্তানের প্রথমবারের মতো টি২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার পথ প্রশস্ত করল।
রশিদ খান ছিলেন অত্যন্ত রাগান্বিত। কারিম জানাতের একটি ভুল সিদ্ধান্ত—একটি রান না নেওয়া—রশিদকে ফুঁসে উঠতে বাধ্য করেছিল। মাঝ পিচে দাঁড়িয়ে রশিদ ক্ষিপ্তভাবে ব্যাট মাটিতে আছাড় মারেন, তার রাগ লুকানোর চেষ্টা করেননি। জানাতও লজ্জায় তার দিকে তাকাতে পারেননি। তখন রশিদ একাই লড়ছিলেন, যতটা সম্ভব রান তোলার চেষ্টা করছিলেন। তানজিম সাকিবের একটি স্লো বল মিস করলেও পরের বলেই ৯৮ মিটারের একটি ছক্কা হাঁকান রশিদ।
রশিদ খানের কেন্দ্রীয় ভূমিকা
রশিদ খানের তিনটি ছক্কার মধ্যে একটি ১৯ রানের ইনিংস আফগানিস্তানের জয় নিশ্চিত করে, বাংলাদেশকে আট রানে হারিয়ে দেয়। বৃষ্টির তিনবার বাধার পরও ম্যাচের উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। বাংলাদেশকে ১২.৪ ওভারে ১১৬ রান করতে হতো, কিন্তু তারা তা পারল না। লিটন দাস শান্তভাবে ব্যাটিং করছিলেন, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
রশিদ খান ছিলেন শান্ত এবং সংযমী। নাভিন-উল-হক প্রথম দিকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিলেও ম্যাচের মূল নায়ক ছিলেন রশিদ খান। তার চার উইকেটের জাদুতে বাংলাদেশ ব্যাটিং লাইনআপ বিধ্বস্ত হয়।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে রশিদ খানের ম্যাজিক।
রশিদ খানের গুগলিতে রিশাদ হোসেন বিভ্রান্ত হলেও অন্য তিনটি উইকেট পুরোপুরি তার দক্ষতার পরিচায়ক। সৌম্য সরকারের উইকেট একটি স্কিডার দিয়ে নেয়া হয়, যা ব্যাটে বল ঠিকমতো আসছিল। তৌহিদ হৃদয়ের উইকেট তার সুন্দর পরিকল্পনার ফসল, এবং মাহমুদুল্লাহর মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকেও ফাঁদে ফেলেন তিনি।
রশিদ খানের নেতৃত্ব এবং প্রভাব
রশিদ খান শুধু একজন বোলারই নয়, তিনি একজন নেতা, অনুপ্রেরণা, এবং আশা। এই ম্যাচে তার ব্যাটিং, বোলিং এবং নেতৃত্বের প্রদর্শন আফগান ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি বিশেষ জায়গা করে নেবে। রশিদ খানের ১৯ রানের ইনিংস, যদিও ছোট, তবে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
ম্যাচের উত্তেজনা এবং নাটকীয়তা
বাংলাদেশের জন্য ম্যাচটি সহজ ছিল না। ১৩তম ওভারে রশিদ নিজেকে বল করতে নিয়ে এলেন, যা ছিল একটি ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ। ম্যাচটি ছিল একটি রোলার কোস্টার রাইড। দাসের ব্যাটিং এবং বাংলাদেশের কৌশল এক সময় আশার আলো দেখিয়েছিল।
শেষ ওভারে ১২ রান দরকার ছিল। কিন্তু নাভিন-উল-হকের দারুণ বোলিংয়ে বাংলাদেশ পরাজিত হয়। তার স্লো বল এবং সোজা ডেলিভারিতে টাসকিন এবং মুস্তাফিজ আউট হন, এবং আফগানিস্তান প্রথমবারের মতো টি২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠে।
জয় উদযাপন
নাভিন-উল-হক জয়ের পর দীর্ঘ দৌড়ে ছুটে যান। গুরবাজ কেঁদে ফেলেন। গুলবাদিন নায়েব দ্রুত একটি স্টাম্প সংগ্রহ করেন। রশিদ খানকে কাঁধে তুলে উল্লাসে মেতে ওঠে পুরো দল। এটি রশিদ খানের রাত ছিল; এটি ছিল আফগানিস্তানের গৌরবময় মুহূর্ত।
COMMENTS